ট্রেডিং কী?
ট্রেডিং একটি মৌলিক অর্থনৈতিক ধারণা যেটিতে অ্যাসেট ক্রয় ও বিক্রয় রয়েছে। এগুলো পণ্য ও পরিষেবা হতে পারে যেখানে বিক্রেতা ক্রেতাকে পারিশ্রমিক প্রদান করে। অন্যান্য ক্ষেত্রে, লেনদেনে ট্রেডে অংশ নেয়া পক্ষগুলোর মধ্যে পণ্য ও পরিষেবার বিনিময় হয়।
আর্থিক মার্কেটের পরিস্থিতিতে, লেনদেন করা অ্যাসেটকে আর্থিক উপকরণ বলা হয়। এগুলো হতে পারে ফরেক্স মার্কেটের স্টক, বন্ড, মুদ্রা জোড়া, অপশন, ফিউচার, মার্জিন পণ্য, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও আরো অনেক কিছু। এই পরিভাষাগুলো যদি আপনার জন্য নতুন হয়, তাহলে চিন্তা করবেন না – আমরা এই নিবন্ধেই পরে সেগুলো ব্যাখ্যা করবো।
ট্রেডিং শব্দটি সাধারণত স্বল্প-মেয়াদী ট্রেডিং বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ট্রেডাররা তুলনামূলকভাবে স্বল্প সময়কালের মধ্যে সক্রিয়ভাবে পজিশনে প্রবেশ করে ও প্রস্থান করে। তবে, এই অনুমান কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, ট্রেডিং বিভিন্ন কৌশলের একটি বিস্তৃত পরিসরকে বোঝাতে পারে, যেমন ডে ট্রেডিং, সুইং ট্রেডিং, প্রবণতা ট্রেডিং ও আরো অনেক কিছু। তবে চিন্তার কিছু নেই। পরে আমরা আরো বিস্তারিতভাবে এগুলোর প্রতিটি নিয়ে আলোচনা করবো।
আপনার শেখাকে চর্চায় নিতে চান?
বিনিয়োগ কী?
বিনিয়োগ হল লাভের আশায় অ্যাসেট (যেমন মূলধন) বরাদ্দ করা। এর মধ্যে কোনো ব্যবসাকে অর্থায়ন ও কিকস্টার্ট করার জন্য অর্থ ব্যবহার করা বা পরবর্তীতে উচ্চ মূল্যে পুনরায় বিক্রি করার লক্ষ্যে জমি কেনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। আর্থিক মার্কেটে, এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত পরবর্তীতে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করার আশায় আর্থিক উপকরণগুলোতে বিনিয়োগ করা হয়।
আয়ের প্রত্যাশা বিনিয়োগ ধারণার মূল বিষয় (এটি ROI নামেও পরিচিত)। বিনিয়োগ সাধারণত অ্যাসেট অর্জনে দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি অবলম্বন করে যা ট্রেডিংয়ের বিপরীত। একজন বিনিয়োগকারীর লক্ষ্য হল দীর্ঘ সময়ে (বছর, এমনকি কয়েক দশক) ধরে অ্যাসেট তৈরি করা। এটি করার বহু উপায় রয়েছে, তবে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত সম্ভাব্য ভালো বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে পেতে মৌলিক নিয়ামকগুলো ব্যবহার করবে।
তাদের পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রকৃতির কারণে, বিনিয়োগকারীরা সাধারণত স্বল্প-মেয়াদী মূল্যের ওঠানামা নিয়ে চিন্তা করেন না। সে কারণে, স্বল্পমেয়াদী ক্ষতি সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা না করে তারা সাধারণত তুলনামূলক নিষ্ক্রিয় থাকে।
ট্রেডিং বনাম বিনিয়োগ – পার্থক্য কী?
ট্রেডার ও বিনিয়োগকারী উভয়ই আর্থিক মার্কেটে মুনাফা অর্জন করতে চায়। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তাদের পদ্ধতিগুলো অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বিনিয়োগকারীরা সাধারণত দীর্ঘ মেয়াদে আয় করতে চায় – ধরে নিন বছর বা এমনকি দশক। বিনিয়োগকারীদের সময় দীর্ঘ হওয়ায় প্রতিটি বিনিয়োগের বিপরীতে টার্গেট আয়ও বড় হতে থাকে।
অন্যদিকে ট্রেডাররা মার্কেটের অস্থিরতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন। পজিশনে তারা ঘন ঘন প্রবেশ করে ও প্রস্থান করে এবং প্রতিটি ট্রেডের সাথে ছোট আয় চাইতে পারে (যেহেতু তারা প্রায়শই একাধিক ট্রেডে প্রবেশ করে)।
কোনটি ভালো? কোনটি আপনার জন্য অধিক উপযুক্ত? এই সিদ্ধান্ত আপনার। আপনি মার্কেট সম্পর্কে নিজেকে ওয়াকিবহাল করা শুরু করতে পারেন এবং তারপর চর্চা করে শিখতে পারেন। সময়ের সাথে সাথে, কোনটি আপনার আর্থিক লক্ষ্য, ব্যক্তিত্ব ও ট্রেডিং প্রোফাইলের জন্য উপযুক্ত তা আপনি নির্ধারণ করতে পারবেন।
এক ঝলকে এই মুহুর্তে বিটকয়েনের (BTC) সর্বশেষ মূল্য দেখে নিন।
মৌলিক বিশ্লেষণ (FA) কী?
মৌলিক বিশ্লেষণ হল আর্থিক অ্যাসেট মূল্যায়নের একটি পদ্ধতি। একজন মৌলিক বিশ্লেষক কোনো অ্যাসেটের মূল্য ন্যায্য কিনা তা নির্ধারণ করতে অর্থনৈতিক ও আর্থিক উভয় কারণ অধ্যয়ন করে। এর মধ্যে বৃহত্তর অর্থনীতির অবস্থা, শিল্পের অবস্থা বা অ্যাসেটের (যদি থাকে) সাথে সংযুক্ত ব্যবসার মতো সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। আর এগুলো প্রায়শই সামষ্টিক অর্থনীতির লিডিং ও ল্যাগিং সূচকগুলোর মাধ্যমে ট্র্যাক করা হয়।
মৌলিক বিশ্লেষণ সম্পন্ন হয়ে গেলে, বিশ্লেষকদের লক্ষ্য হয় অ্যাসেটের মূল্য অবমূল্যায়িত নাকি অতিমূল্যায়িত তা নির্ধারণ করা। বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এই ফলাফল ব্যবহার করতে পারেন।
ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে, মৌলিক বিশ্লেষণে ডেটা সায়েন্সের একটি উদীয়মান ক্ষেত্রও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যেটি অন-চেইন মেট্রিক্স নামে পরিচিত পাবলিক ব্লকচেইন ডেটা নিয়ে কাজ করে। এই মেট্রিক্সে নেটওয়ার্ক হ্যাশ রেট, শীর্ষ ধারক, ঠিকানার সংখ্যা, লেনদেনের বিশ্লেষণ ও আরো অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। পাবলিক ব্লকচেইনে উপলভ্য ডেটার প্রাচুর্য ব্যবহার করে বিশ্লেষকরা প্রযুক্তিগত জটিল সূচক তৈরি করতে পারেন যা নেটওয়ার্কের সামগ্রিক অবস্থার নির্দিষ্ট কিছু দিক পরিমাপ করে।
মৌলিক বিশ্লেষণ স্টক মার্কেট বা ফরেক্সে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হলেও, ক্রিপ্টোকারেন্সির বর্তমান অবস্থায় এটি অতটা উপযুক্ত নয়। এই অ্যাসেট শ্রেণীটি এতটাই নতুন যে মার্কেট ভ্যালুয়েশন নির্ধারণের জন্য কোনো স্ট্যান্ডার্ড, সামগ্রিক কাঠামো নেই। এছাড়াও, মার্কেটের অধিকাংশই অনুমান ও বর্ণনার দ্বারা চালিত হয়। সে কারণে, মৌলিক কারণগুলো কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যের উপর সাধারণত নগণ্য প্রভাব ফেলবে। তবে, মার্কেট পরিপক্ক হওয়ার পরে ক্রিপ্টোঅ্যাসেটের ভ্যালুয়েশন সম্পর্কে চিন্তা করার আরো সঠিক উপায় তৈরি হতে পারে।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ (TA) কী?
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকরা একটি ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের পিছনে মূল ধারণাটি হল যে মার্কেটের অতীত প্রাইস অ্যাকশন ভবিষ্যতের আচরণ নির্দেশ করতে পারে।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকগণ একটি অ্যাসেটের অন্তর্নিহিত মান খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন না। পরিবর্তে, তারা ঐতিহাসিক ট্রেডিং কার্যকলাপ দেখেন ও তার উপর ভিত্তি করে সুযোগগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে প্রাইস অ্যাকশন ও পরিমাণ বিশ্লেষণ, চার্ট প্যাটার্ন এবং প্রযুক্তিগত সূচকের ব্যবহার ও অন্যান্য অনেক চার্টিং ট্যুল অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এই বিশ্লেষণের লক্ষ্য হল প্রদত্ত কোনো মার্কেটের শক্তি বা দুর্বলতা মূল্যায়ন করা।
এগুলোর বাইরেও, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শুধুমাত্র ভবিষ্যতে মূল্য ওঠানামার সম্ভাব্যতার ভবিষ্যদ্বাণী করার হাতিয়ারই নয়। এটি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য একটি দরকারী কাঠামোও হতে পারে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ মার্কেটের কাঠামো বিশ্লেষণের জন্য একটি মডেল প্রদান করায়, এটি ট্রেড পরিচালনাকে আরো নির্দিষ্ট ও পরিমাপযোগ্য করে তোলে। এই প্রেক্ষাপটে, ঝুঁকি নির্ণয় করা পরিচালনা করার প্রথম পদক্ষেপ। এই কারণে কিছু কিছু প্রযুক্তিগত বিশ্লেষককে ঠিক ট্রেডার হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। তারা প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণকে একমাত্র ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কাঠামো হিসেবেই ব্যবহার করতে পারেন।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের চর্চা যেকোনো আর্থিক মার্কেটে প্রয়োগ করা যেতে পারে এবং এটি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ কি কার্যকর হয়? ওকে, যেমনটি আমরা আগে উল্লেখ করেছি, ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটের ভ্যালুয়েশন মূলত অনুমান দ্বারা চালিত হয়। এটি প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকদের জন্য একটি আদর্শ কর্মক্ষেত্র, কারণ তারা কেবল প্রযুক্তিগত নিয়ামক বিবেচনা করেই সাফল্য অর্জন করতে পারে।
মৌলিক বিশ্লেষণ বনাম প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ – কোনটি ভালো?
এটি সম্পূর্ণরূপে আপনার ট্রেডিং কৌশলের উপর নির্ভর করে। সত্যি কথা বলতে, দুটোই ব্যবহার করা যায় না? অধিকাংশ মার্কেট বিশ্লেষণ পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো কাজ করে যখন সেগুলোকে অন্যান্য পদ্ধতি বা সূচকের সাথে সমন্বিত করা হয়। এই পদ্ধতিতে, আরো নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের সুযোগ খোঁজার একটি বড় সুযোগ থাকে। বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল সমন্বিত করলে আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় পক্ষপাত দূর করতেও সাহায্য করতে পারে।
এই ধারণাটিকে কখনও কখনও সমন্বয় করা (Confluence) হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সমন্বয় করা ট্রেডাররা একাধিক কৌশলকে একটির মধ্যে সমন্বিত করে যা তাদেরকে সেগুলোর সকল সুবিধাগুলোকে কাজে লাগায়। ধারণাটি হল এই যে সম্মিলিত কৌশলগুলোর দ্বারা উপস্থাপিত ট্রেডিং সুযোগ শুধুমাত্র একটি কৌশল দ্বারা প্রদত্ত সুযোগগুলোর চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে শুরু করতে চাইছেন? Binance-এ বিটকয়েন ক্রয় করুন!
কী আর্থিক মার্কেটকে চালিত করে?
কোনো অ্যাসেটের মূল্য কেবল সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য দ্বারা নির্ধারিত হয়। অন্য কথায়, এটি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দ্বারা নির্ধারিত হয়। সরবরাহ যেখানে চাহিদা পূরণ করে, সেখানে একটি মার্কেট হয়। কিন্তু আর কী কী বিষয় আর্থিক অ্যাসেটের মূল্যকে চালিত করতে পারে?
যেমনটি আমরা আগে আলোচনা করেছি, অর্থনীতির অবস্থার মতো মৌলিক কারণ থাকতে পারে। এর পাশাপাশি, কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সির মার্কেট মূলধনের মতো প্রযুক্তিগত কারণ থাকতে পারে। এছাড়াও, বিবেচনা করার মত অন্যান্য কারণও থাকতে পারে, যেমন মার্কেটের অনুভূতি বা সাম্প্রতিক খবর।
তবে, এগুলো শুধুমাত্র এই পর্যন্তই – বিবেচনা করার মত নিয়ামক। কোনো নির্দিষ্ট মুহুর্তে প্রকৃতপক্ষে কোনো অ্যাসেটের মূল্য যা নির্ধারণ করে তা হল সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য।
মার্কেট প্রবণতা কী?
কোনো মার্কেটের প্রবণতা হল অ্যাসেটের মূল্যের অভিমুখের সামগ্রিক দিক। কারিগরি বিশ্লেষণে, মার্কেটের প্রবণতাগুলোকে সাধারণত প্রাইস অ্যাকশন, প্রবণতা রেখা বা এমনকি কী চলমান গড় ব্যবহার করে চিহ্নিত করা হয়।
সাধারণত, দুটি প্রধান ধরনের মার্কেটের প্রবণতা রয়েছে: ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী বাজার। কোনো ঊর্ধ্বমুখী বাজার একটি টেকসই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিয়ে গঠিত, যেখানে মূল্যের ক্রমাগত বাড়তে থাকে। কোনো নিম্নমুখী বাজার একটি টেকসই নিম্নমুখী প্রবণতা নিয়ে গঠিত, যেখানে মূল্য ক্রমাগত কমতে থাকে। এছাড়াও, আমরা মিশ্র (Consolidating) বা "সাইডওয়ে" মার্কেটগুলোকেও চিহ্নিত করতে পারি, যেখানে কোনো স্পষ্ট অভিমুখের প্রবণতা নেই।
বিটকয়েনের অস্তিত্বের পুরো সময় জুড়ে ঊর্ধ্বমুখী মার্কেটে আছে।
এটা লক্ষণীয় যে মার্কেটের প্রবণতার মানে এই নয় যে মূল্য সবসময় প্রবণতার দিকে যাচ্ছে। কোনো দীর্ঘায়িত ঊর্ধ্বমুখী মার্কেটে তুলনামূলক কম নিম্নমুখী প্রবণতা থাকবে এবং এর উল্টোটিও সত্য। এটি মার্কেটের প্রবণতার প্রকৃতি মাত্র। এটি দৃষ্টিভঙ্গির বিষয় কারণ এটি সবই নির্ভর করে আপনি যে সময়সীমার দিকে তাকাচ্ছেন তার উপর। দীর্ঘ মধ্যবর্তী কালের (Higher Time Frame) মার্কেটের প্রবণতা সর্বদা স্বল্প মধ্যবর্তী কালের (Lower Time Frames) মার্কেট প্রবণতার চেয়ে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হবে।
মার্কেট প্রবণতার একটি অদ্ভুত বিষয় হল যে এগুলোকে কেবল তখনই নির্ধারণ করা যায় যখন সময় ইতোমধ্যে পার হয়ে গিয়েছে। আপনি হয়ত অতীতে তাকিয়ে পক্ষপাতের (Hindsight Bias) ধারণা সম্পর্কে শুনেছেন, যা মানুষের নিজেকে বোঝানোর প্রবণতাকে বোঝায় যে তারা কোনো ঘটনা ঘটার আগে সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। বুঝতেই পারছেন যে, মার্কেটের প্রবণতা শনাক্তকরণ ও ট্রেডিং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অতীতে তাকিয়ে পক্ষপাত একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
মার্কেট চক্র কী?
আপনি হয়তো এই বাক্যাংশটি শুনে থাকবেন যে "মার্কেট চক্রে চলে"। কোনো চক্র হল একটি প্যাটার্ন বা প্রবণতা যা বিভিন্ন সময়ে উদ্ভূত হয়। সাধারণত, দীর্ঘ মধ্যবর্তী কালের মার্কেট স্বল্প মধ্যবর্তী কালের মার্কেট চক্রের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য। তবুও, আপনি যদি কয়েক দশকের ডেটা দেখেন তাহলে আপনি প্রতি ঘন্টার চার্টে ক্ষুদ্র মার্কেট চক্র দেখতে পাবেন।
মার্কেটগুলো প্রকৃতিতে চক্রাকার। চক্র, নির্দিষ্ট কোনো অ্যাসেট শ্রেণীতে অন্যদের ছাড়িয়ে যেতে পারে। একই মার্কেট চক্রের অন্যান্য সেগমেন্টে, সেই একই অ্যাসেট শ্রেণীগুলো ভিন্ন মার্কেটের পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য ধরনের অ্যাসেটে কম পারফর্ম করতে পারে।
এটি লক্ষণীয় যে প্রদত্ত যেকোনো মুহূর্তে আমরা বর্তমানে কোন মার্কেট চক্রের মধ্যে রয়েছি তা নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব। চক্রের সেই অংশটি শেষ হওয়ার পরেই শুধু এই বিশ্লেষণটি সর্বোচ্চ নির্ভুলতার সাথে করা যেতে পারে। এছাড়াও মার্কেট চক্রের খুব কমই নির্দিষ্ট শুরু ও শেষ বিন্দু থাকে। ফলে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান মুহুর্তে থাকা আর্থিক মার্কেটে একটি অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি।
আপনি যদি মার্কেট চক্র সম্পর্কে আরো পড়তে চান তবে মার্কেট চক্রের মনোবিজ্ঞান দেখুন।
ট্রেডিং করে দেখার জন্য প্রস্তুত?
অধ্যায় 2 – আর্থিক মার্কেট এবং ট্রেডিং উপকরণ
কনটেন্ট
কোনো আর্থিক উপকরণ কী?
সহজ কথায়, কোনো আর্থিক উপকরণ হল একটি লেনদেনযোগ্য অ্যাসেট। উদাহরণের মধ্যে রয়েছে ক্যাশ, মূল্যবান ধাতু (যেমন সোনা বা রৌপ্য), কোনো নথি যা কোনো কিছুর মালিকানা নিশ্চিত করে (যেমন কোনো ব্যবসা বা অ্যাসেট), ক্যাশ প্রদান বা গ্রহণের অধিকার এবং আরো অনেক কিছু। আর্থিক উপকরণ জটিল হতে পারে, কিন্তু মৌলিক ধারণা হল এই যে তারা যাই হোক না কেন বা তারা যার প্রতিনিধিত্বই করে না কেন, সেগুলো ট্রেডযোগ্য।
বিভিন্ন শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে আর্থিক উপকরণগুলোর বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। শ্রেণীবিন্যাসগুলোর মধ্যে একটি সেগুলো ক্যাশ উপকরণ না ডেরিভেটিভ উপকরণ তার উপর নির্ভর করে। নামেই বোঝা যাচ্ছে যে, ডেরিভেটিভ উপকরণ অন্য কিছু (যেমন কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সি) থেকে তাদের ভ্যালু অর্জন করে। আর্থিক উপকরণ ঋণ-ভিত্তিক বা ইকুইটি-ভিত্তিক হিসেবেও শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে।
কিন্তু এখানে ক্রিপ্টোকারেন্সির জায়গা কোথায়? আমরা সেগুলোকে একাধিক উপায়ে ভাবতে পারি এবং সেগুলো একাধিক ক্যাটাগরিতে পড়তে পারে। সবচেয়ে সহজ শ্রেণীবিভাগ হল এগুলো ডিজিটাল অ্যাসেট। তবে, ক্রিপ্টোকারেন্সির সম্ভাবনা একটি সম্পূর্ণ নতুন আর্থিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার মধ্যে নিহিত।
এই অর্থে, ক্রিপ্টোকারেন্সি ডিজিটাল অ্যাসেটের সম্পূর্ণ নতুন ক্যাটাগরি গঠন করে। অধিকন্তু, ইকোসিস্টেমের বিকাশের সাথে সাথে অনেক নতুন ক্যাটাগরি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে যা অন্যথায় সম্ভব হত না। এর প্রাথমিক উদাহরণ ইতোমধ্যেই ডিসেন্ট্রালাইজড ফাইনান্স (DeFi) স্পেসে দেখা যাবে।
স্পট মার্কেট কী?
স্পট মার্কেট হল যেখানে আর্থিক উপকরণ "তাৎক্ষণিক ডেলিভারি" এর জন্য ট্রেড করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে ডেলিভারির অর্থ হল ক্যাশের বিপরীতে আর্থিক উপকরণ বিনিময় করা। এটি একটি অপ্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট প্রদানের মতো মনে হতে পারে, তবে কিছু কিছু মার্কেট তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাশে নিষ্পত্তি হয় না। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা ফিউচার মার্কেট সম্পর্কে কথা বলি, তখন অ্যাসেটগুলো পরবর্তী তারিখে বিতরণ করা হয় (যখন ফিউচার কন্ট্রাক্টের মেয়াদ শেষ হয়)।
সহজ কথায়, স্পট মার্কেটকে সেই জায়গা হিসেবে আপনি ভাবতে পারেন যেখানে "তাৎক্ষনিকভাবে" ট্রেড করা হয়। ট্রেড যেহেতু অবিলম্বে নিষ্পত্তি করা হয়, তাই কোনো অ্যাসেটের বর্তমান মার্কেট মূল্যকে প্রায়শই স্পট মূল্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
সুতরাং, ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটের প্রসঙ্গে এর অর্থ কী? আপনি Binance স্পট মার্কেটে কী করতে পারেন? আপনি কয়েন একে অপরের সাথে বিনিময় করতে পারেন। সুতরাং, আপনি যদি আপনার BNB-কে BUSD এর সাথে বিনিময় করতে চান, তাহলে আপনি BNB/BUSD স্পট মার্কেটে যাবেন এবং তাহলেই হল! একইভাবে, আপনি যদি আপনার BNB-কে BTC এর সাথে বিনিময় করতে চান, তাহলে আপনি BNB/BTC স্পট মার্কেটে যাবেন। আপনার অর্ডারগুলো পূরণ হয়ে গেলে, আপনার কয়েনগুলো অবিলম্বে সোয়াপ করা হবে। ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করার এটি হল সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি।
মার্জিন ট্রেডিং কী?
মার্জিন ট্রেডিং হল তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে ধার করা ফান্ড ব্যবহার করে ট্রেড করার একটি পদ্ধতি। কার্যত, মার্জিনে ট্রেডিং ফলাফলকে বর্ধিত করে – উপর ও নীচ দুই দিকেই। মার্জিন অ্যাকাউন্ট ট্রেডারদেরকে মূলধনে অধিক অ্যাক্সেস দেয় এবং কিছু প্রতিপক্ষের ঝুঁকি দূর করে। কিভাবে? আসলে, ট্রেডারগণ একই পজিশনের আকার ট্রেড করতে পারে তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জে কম মূলধন রাখতে পারে।
মার্জিন ট্রেডিংয়ের প্রসঙ্গ আসলে, আপনি প্রায়শই মার্জিন ও লিভারেজ শব্দ দুটি শুনতে পাবেন। মার্জিন বলতে আপনি যে পরিমাণ মূলধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেটিকে বোঝায় (অর্থাৎ, আপনার নিজের পকেট থেকে জমা করা)। লিভারেজ মানে সেই পরিমাণ যা দিয়ে আপনি আপনার মার্জিনকে বর্ধিত করেন। সুতরাং, আপনি যদি 2x লিভারেজ ব্যবহার করেন, তাহলে এর অর্থ হল আপনি এমন একটি পজিশন খুলবেন যা আপনার মার্জিনের দ্বিগুণ। আপনি যদি 4x লিভারেজ ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি এমন একটি পজিশন খুলবেন যা আপনার মার্জিনের মূল্যের চারগুণ, ইত্যাদি।
তবে তরলীকরণ সম্পর্কে সচেতন হোন। আপনি যত বেশি লিভারেজ ব্যবহার করবেন, তরলীকরণ মূল্য আপনার এন্ট্রির কাছাকাছি হবে। আপনাকে তরলীকরণ করা হলে, আপনি আপনার সম্পূর্ণ মার্জিন হারানোর ঝুঁকি নেবেন। সুতরাং, শুরু করার আগে মার্জিনে ট্রেড করার উচ্চ ঝুঁকি সম্পর্কে খুব সতর্ক থাকুন। আপনি শুরু করার আগে Binance মার্জিন ট্রেডিং গাইড একটি অপরিহার্য অ্যাসেট।
মার্জিন ট্রেডিং স্টক, কমোডিটি এবং ফরেক্স ট্রেডিংয়ের পাশাপাশি বিটকয়েন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। আরো প্রচলিত পরিবেশে, ধার করা ফান্ড কোনো বিনিয়োগ ব্রোকার দ্বারা প্রদান করা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে, ফান্ডগুলো সাধারণত কোনো ফান্ড ফি এর বিনিময়ে এক্সচেঞ্জ দ্বারা ধার দেওয়া হয়। তবে অন্য কিছু ক্ষেত্রে, ধার করা ফান্ড সরাসরি প্ল্যাটফর্মের অন্যান্য ট্রেডারদের কাছ থেকে আসতে পারে। এতে সুদের হার (ফান্ডিং ফি) সাধারণত অনির্দিষ্ট হবে কারণ এই হার একটি খোলা মার্কেট দ্বারা নির্ধারিত হয়।
আমরা মার্জিন ট্রেডিং কী তা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করেছি, কিন্তু শেখার কোনো শেষ নেই। আপনি যদি আরো পড়তে চান তাহলে মার্জিন ট্রেডিং কী? দেখুন।
ডেরিভেটিভ মার্কেট কী?
ডেরিভেটিভ হল আর্থিক অ্যাসেট যেগুলোর মূল্য অন্য কিছুর উপর ভিত্তি করে। এটি কোনো অন্তর্নিহিত অ্যাসেট বা অ্যাসেটের সমাহার হতে পারে। সবচেয়ে প্রচলিত ধরণগুলো হল স্টক, বন্ড, পণ্য, মার্কেট সূচক বা ক্রিপ্টোকারেন্সি।
ডেরিভেটিভ পণ্যটি নিজেই মূলত একাধিক পক্ষের মধ্যে হওয়া একটি কন্ট্রাক্ট। এটি বেঞ্চমার্ক হিসেবে ব্যবহৃত অন্তর্নিহিত অ্যাসেট থেকে এর মূল্য পায়। এই রেফারেন্স পয়েন্ট হিসেবে যে অ্যাসেটই ব্যবহার করা হোক না কেন, মূল ধারণাটি হল এই যে ডেরিভেটিভ পণ্য এটি থেকেই তার মূল্য অর্জন করে। ডেরিভেটিভ পণ্যের কিছু প্রচলিত উদাহরণ হল ফিউচার কন্ট্রাক্ট, অপশন কন্ট্রাক্ট এবং সোয়াপ।
কিছু কিছু অনুমান অনুযায়ী, ডেরিভেটিভ মার্কেট হল বৃহত্তম মার্কেটগুলোর মধ্যে একটি। কিভাবে? আসলে, ডেরিভেটিভগুলো কার্যত যেকোনো আর্থিক পণ্যের জন্য থাকতে পারে – এমনকি ডেরিভেটিভগুলোর জন্যেও। হ্যাঁ, ডেরিভেটিভ থেকে ডেরিভেটিভ তৈরি করা যেতে পারে। এবং তারপর, সেই ডেরিভেটিভগুলো থেকে ডেরিভেটিভ তৈরি করা যেতে পারে, ইত্যাদি। এটি শুনতে কি ভেঙে পড়ার জন্য প্রস্তুত নড়বড়ে তাসের ঘরের মত মনে হচ্ছে? মূলত, এটি সত্য থেকে খুব দূরে নাও হতে পারে। কেউ কেউ যুক্তি দেন যে ডেরিভেটিভ মার্কেট 2008 সালের আর্থিক সংকটে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল।
ফরোয়ার্ড ও ফিউচার কন্ট্রাক্ট কী?
একটি ফিউচার কন্ট্রাক্ট হল এক ধরনের ডেরিভেটিভ পণ্য যা ট্রেডারদেরকে কোনো অ্যাসেটের ভবিষ্যত মূল্য সম্পর্কে অনুমান করতে দেয়। এতে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ বলে পরবর্তী কোনো তারিখে লেনদেন নিষ্পত্তি করার জন্য পক্ষগুলোর মধ্যে একটি কন্ট্রাক্ট থাকে। ডেরিভেটিভ নিয়ে আলোচনার সময় যেমনটি বলেছি, এই ধরনের কন্ট্রাক্টের অন্তর্নিহিত অ্যাসেট যেকোনো অ্যাসেটই হতে পারে। প্রচলিত উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সি, কমোডিটি, স্টক এবং বন্ড।
কোনো ফিউচার কন্ট্রাক্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ হল সেই নির্দিষ্ট কন্ট্রাক্টের জন্য ট্রেডিং কার্যকলাপ চলার শেষ দিন। সেই দিন শেষে, কন্ট্রাক্টের মেয়াদ সর্বশেষ ট্রেড করা মূল্যে শেষ হয়। কন্ট্রাক্টের নিষ্পত্তি আগে থেকে নির্ধারিত থাকে এবং এটি হয় ক্যাশ-নিষ্পত্তি বা ফিজিক্যালি- বণ্টন হতে পারে।
এটি যখন ফিজিক্যালি বিতরণ করা হয়, তখন কন্ট্রাক্টের অন্তর্নিহিত অ্যাসেট সরাসরি বিনিময় হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্যারেল অয়েল সরবরাহ করা হল। যখন এটি ক্যাশে নিষ্পত্তি করা হয়, তখন অন্তর্নিহিত অ্যাসেটটি নয়, শুধুমাত্র সেই ভ্যালু সরাসরি বিনিময় হয় যেটি প্রতিনিধিত্ব এটি করে (ক্যাশ বা ক্রিপ্টোকারেন্সি আকারে)।
আপনি যদি Binance-এ ফিউচার ট্রেড করতে চান, তাহলে Binance ফিউচারে ট্রেডিংয়ের আলটিমেট গাইডদেখতে ভুলবেন না।
মেয়াদবিহীন ফিউচার কন্ট্রাক্ট কী?
কোনো অ্যাসেটের মূল্য অনুমান করার ফিউচার পণ্যগুলো ট্রেডারদের জন্য একটি দুর্দান্ত উপায়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যদি তারা তাদের পজিশনে থাকতে চান তাহলে কী হবে?
আসলো মেয়াদবিহীন ফিউচার কন্ট্রাক্ট। এগুলো এবং একটি নিয়মিত ফিউচার কন্ট্রাক্টের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল যে এগুলোর কখনোই মেয়াদ শেষ হয় না। এভাবে, ট্রেডাররা মেয়াদ শেষ হওয়ার চিন্তা না করেই অন্তর্নিহিত অ্যাসেটের মূল্যের উপর অনুমান করতে পারে।
তবে, এটিই নিজেই একটি সমস্যা। মেয়াদবিহীন ফিউচার কন্ট্রাক্টের মূল্য যদি অন্তর্নিহিত অ্যাসেটের মূল্য থেকে অনেক দূরে চলে যায় তাহলে কী হবে? কোনো মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ না থাকায়, চিরস্থায়ী ফিউচার মার্কেটের স্পট মার্কেটের সাথে একটি উল্লেখযোগ্য, ক্রমাগত বৈষম্য থাকতে পারে।
এই কারণেই চিরস্থায়ী ফিউচার কন্ট্রাক্টগুলো একটি ফান্ড ফি কার্যকর করে যা ট্রেডারদের মধ্যে প্রদান করা হয়। আসুন কল্পনা করা যাক যে মেয়াদবিহীন ফিউচার মার্কেট স্পট মার্কেটের চেয়ে বেশি মূল্যে ট্রেড করছে। এই ক্ষেত্রে, ফান্ডের হার ধনাত্মক হবে, যার অর্থ লং পজিশন (ক্রেতারা) শর্ট পজিশনকে (বিক্রেতাদের) ফান্ডিং ফি প্রদান করে। এটি ক্রেতাদের বিক্রয় করতে উৎসাহিত করে, যার ফলে কন্ট্রাক্টের মূল্য কমে যায়, এটি স্পট মূল্যের কাছাকাছি চলে যায়। বিপরীতভাবে, মেয়াদবিহীন ফিউচার মার্কেট যদি স্পট মার্কেটের চেয়ে কম মূল্যে ট্রেড করে, তাহলে ফান্ডিং রেট ঋণাত্মক হবে। এই সময়, কন্ট্রাক্টের মূল্য বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে শর্ট লংকে পে করে।
সংক্ষেপে বলা যায়, ফান্ড যদি ধনাত্মক হয়, তাহলে লং শর্টকে পে করে। ফান্ড ঋণাত্মক হলে, শর্ট লং-কে পে করে।
মেয়াদবিহীন ফিউচার কন্ট্রাক্ট বিটকয়েন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডারদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আপনি যদি মেয়াদবিহীন ফিউচার কন্ট্রাক্ট সম্পর্কে আরো পড়তে চান, তাহলে মেয়াদবিহীন ফিউচার কন্ট্রাক্ট কী দেখুন।
আপনার নিজের পোর্টফোলিও শুরু করতে চান?
অপশন কন্ট্রাক্ট কী?
কোনো অপশন কন্ট্রাক্ট হল এক ধরনের ডেরিভেটিভ পণ্য যা ট্রেডারদেরকে একটি নির্দিষ্ট মূল্যে ভবিষ্যতে কোনো অ্যাসেট ক্রয় বা বিক্রয় করার অধিকার দেয়, কিন্তু বাধ্যবাধকতা আরোপ করে না। একটি ফিউচার কন্ট্রাক্ট এবং একটি অপশন কন্ট্রাক্টের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল যে ট্রেডাররা অপশন কন্ট্রাক্টে নিষ্পত্তি করতে বাধ্য নয়।
ট্রেডাররা যখন কোনো অপশন কন্ট্রাক্ট ক্রয় করে, তখন তারা অনুমান করে যে মূল্য কোন দিকে যাচ্ছে।
দুই ধরনের অপশন কন্ট্রাক্ট রয়েছে: কল অপশন এবং পুট অপশন। কল অপশন মূল্য বাড়ার উপর বাজি রাখে, আর পুট অপশন মূল্য করার উপরে।
অন্যান্য ডেরিভেটিভ পণ্যগুলোর মতো, অপশন কন্ট্রাক্টগুলো বিভিন্ন ধরণের আর্থিক অ্যাসেটের উপর ভিত্তি করে হতে পারে: মার্কেট সূচক, পণ্য, স্টক, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং আরো অনেক কিছু।
অপশন কন্ট্রাক্ট হেজিং এর মত অত্যন্ত জটিল ট্রেডিং কৌশল ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সক্রিয় করতে পারে। ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে, বড় অংকের ক্রিপ্টোকারেন্সি হোল্ডিং হেজ করতে চাওয়া মাইনারদের জন্য অপশন সবচেয়ে উপযোগী হতে পারে। এই পদ্ধতিতে, তাদের ফান্ডের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে সক্ষম ইভেন্টগুলোর বিরুদ্ধে আরো ভালভাবে সুরক্ষিত থাকে।
আপনি যদি অপশন কন্ট্রাক্ট সম্পর্কে আরো পড়তে চান তাহলে অপশন কন্ট্রাক্ট কী? দেখুন। আপনি যদি Binance-এ অপশন ট্রেড করতে চান, তাহলে প্রথমে iOS এবং অ্যান্ড্রয়েডের জন্য আমাদের অপশন নির্দেশিকা পড়তে ভুলবেন না।
বৈদেশিক মুদ্রা (ফরেক্স) মার্কেট কী?
বৈদেশিক মুদ্রা (ফরেক্স, এফএক্স) মার্কেট হল যেখানে ট্রেডাররা এক দেশের মুদ্রার সাথে অন্য দেশের মুদ্রা বিনিময় করতে পারে। মোটকথা, বিশ্বব্যাপী মুদ্রার বিনিময় হার ফরেক্স মার্কেট নির্ধারণ করে।
আমরা হয়ত মুদ্রাকে "সবচেয়ে নিরাপদ" অ্যাসেট হিসেবে ভাবতে পারি। এমনকি "স্ট্যাবলকয়েন" শব্দটি তত্ত্বগতভাবে এটি বোঝানোর কথা যে অ্যাসেটটি কোনোভাবে অস্থিরতা থেকে নিরাপদ। তবে, এটি কিছু পরিমাণে সঠিক হলেও, মুদ্রাও মার্কেটের উল্লেখযোগ্য ওঠানামার শিকার হতে পারে। কিভাবে? আসলে, মুদ্রার মানও সরবরাহ এবং চাহিদা দ্বারা নির্ধারিত হয়। উপরন্তু, তারা মুদ্রাস্ফীতি বা বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত অন্যান্য মার্কেট শক্তি এবং ভূ-রাজনৈতিক কারণগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।
ফরেক্স মার্কেট কিভাবে কাজ করে? বিনিয়োগ ব্যাংক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাণিজ্যিক কোম্পানি, বিনিয়োগ সংস্থা, হেজ ফান্ড এবং খুচরা ফরেক্স ট্রেডাররা মুদ্রা জোড়ালেনদেন করতে পারে। বৈদেশিক মুদ্রার মার্কেট আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিষ্পত্তির জন্য বিশ্বব্যাপী মুদ্রা রূপান্তরও সক্ষম করে।
আয় বৃদ্ধি করতে ফরেক্স ট্রেডাররা সাধারণত লিভারেজসহ স্ক্যাল্পিং এর মত ডে ট্রেডিং কৌশলগুলো ব্যবহার করেন। এই নিবন্ধে আরো পরে আমরা এটি ঠিক কিভাবে কাজ করে তা আলোচনা করবো।
আমরা আধুনিক বৈশ্বিক অর্থনীতিকে যেভাবে জানি তার অন্যতম প্রধান বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে ফরেক্স মার্কেট। বস্তুত, ফরেক্স মার্কেট হল বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে তরল আর্থিক মার্কেট।
লিভারেজযুক্ত টোকেনগুলো কী কী?
লিভারেজযুক্ত টোকেন হল লেনদেনযোগ্য অ্যাসেট যা কোনো লিভারেজযুক্ত পজিশন পরিচালনার সাধারণ প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই আপনাকে কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যের বিপরীতে লিভারেজসহ উপস্থাপন করতে পারে। এর মানে আপনাকে মার্জিন, সহায়ক জামানত, ফান্ড এবং তরলীকরণ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
লিভারেজযুক্ত টোকেন একটি উদ্ভাবনী আর্থিক পণ্য যা শুধুমাত্র ব্লকচেইনের শক্তির কল্যাণে বিদ্যমান রয়েছে। লিভারেজযুক্ত টোকেনগুলো প্রাথমিকভাবে ডেরিভেটিভ এক্সচেঞ্জ FTX দ্বারা চালু করা হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে বিভিন্ন বিকল্প বাস্তবায়ন দেখা গেছে। তবে পিছনের মূল ধারণাটি এখনও একই রয়েছে আর তা হল – ওপেন লিভারেজযুক্ত পজিশনকে টোকেনাইজ করা। এটার মানে কী?
লিভারেজযুক্ত টোকেন ওপেন মেয়াদবিহীন ফিউচার পজিশনকে একটি টোকেন আকারে উপস্থাপন করে। মনে আছে কখন আমরা আলোচনা করেছি কিভাবে ডেরিভেটিভ থেকে ডেরিভেটিভ তৈরি করা যায়? লিভারেজযুক্ত টোকেন একটি উপযুক্ত উদাহরণ কারণ তারা তাদের মূল্য ফিউচার পজিশন থেকে গ্রহণ করে, যেটিও ডেরিভেটিভ।
কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সির বিপরীতে একটি সহজ লিভারেজযুক্ত অবস্থান পাওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায় হল লিভারেজযুক্ত টোকেন। Binance-এ আপনি এগুলো ট্রেড করতে চাইলে Binance লিভারেজযুক্ত টোকেন/টোকেনসমূহ (BLVT) এর শিক্ষানবিস গাইড দেখুন।
আপনি যদি FTX লিভারেজযুক্ত টোকেন সম্পর্কে পড়তে চান, তাহলে FTX লিভারেজযুক্ত টোকেনের শিক্ষানবিস গাইড দেখুন।
অধ্যায় 3 – ট্রেডিং এবং বিনিয়োগ কৌশল
কনটেন্ট
ট্রেডিং কৌশল কী?
ট্রেড করার সময় আপনি যে পরিকল্পনা অনুসরণ করেন সেটিই ট্রেডিং কৌশল। ট্রেড করার জন্য কোন একক সঠিক পন্থা নেই, তাই প্রতিটি কৌশল মূলত ট্রেডারের প্রোফাইল ও পছন্দের উপর নির্ভর করবে।
ট্রেডিংয়ের জন্য আপনার পদ্ধতি যাই হোক না কেন, একটি পরিকল্পনা ঠিক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ – এটি স্পষ্ট লক্ষ্যগুলোকে চিহ্নিত করে এবং আবেগবশত আপনার ভুল করা থেকে বিরত রাখতে পারে। সাধারণত, আপনি কী ট্রেড করবেন, কিভাবে ট্রেডিং করতে যাচ্ছেন এবং যে পয়েন্টে আপনি প্রবেশ করবেন এবং প্রস্থান করবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে, আমরা জনপ্রিয় ট্রেডিং কৌশলগুলোর কয়েকটি উদাহরণ নিয়ে আলাপ করবো।
পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা কী?
পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা কোনো বিনিয়োগের সংগ্রহ তৈরি ও পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট। পোর্টফোলিওটি নিজেই অ্যাসেটের একটি গ্রুপিং – এতে পুতুল থেকে রিয়েল এস্টেট পর্যন্ত যেকোনো কিছু থাকতে পারে। আপনি যদি শুধুমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করেন, তাহলে এটি সম্ভবত বিটকয়েন এবং অন্যান্য ডিজিটাল কয়েন ও টোকেনের কিছু সমন্বয়ে তৈরি হবে।
আপনার প্রথম ধাপ হল পোর্টফোলিওর জন্য আপনার প্রত্যাশা বিবেচনা করা। আপনি কি এমন বিনিয়োগের সমাহার খুঁজছেন যা তুলনামূলকভাবে অস্থিরতা থেকে সুরক্ষিত থাকবে, অথবা ঝুঁকিপূর্ণ কিছু যা স্বল্পমেয়াদে উচ্চতর আয় নিয়ে আসতে পারে?
আপনি কিভাবে আপনার পোর্টফোলিও পরিচালনা করতে চান সে সম্পর্কে কিছু চিন্তাভাবনা করা অত্যন্ত উপকারী। কেউ কেউ প্যাসিভ কৌশল পছন্দ করতে পারেন – যেখানে আপনি সেট আপ করার পরে আপনার বিনিয়োগগুলো রেখে দেন। অন্যরা সক্রিয় পন্থা অবলম্বন করতে পারেন যেখানে তারা মুনাফা অর্জনের জন্য ক্রমাগত অ্যাসেট ক্রয় ও বিক্রয় করেন।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কী?
ট্রেডিংয়ে সাফল্যের জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অত্যাবশ্যক। আপনি যে ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন তা চিহ্নিত করার মাধ্যমে এটি শুরু হয়:
মার্কেটের ঝুঁকি: অ্যাসেট মূল্য হারালে আপনি যে সম্ভাব্য ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
তারল্য ঝুঁকি: তারল্যের অভাব থাকা মার্কেট থেকে উদ্ভূত সম্ভাব্য ক্ষতি, যেখানে আপনি সহজে আপনার অ্যাসেটের জন্য ক্রেতা খুঁজে পাবেন না।
অপারেশনাল ঝুঁকি: সম্ভাব্য ক্ষতি যা অপারেশনাল ব্যর্থতা থেকে উদ্ভূত হয়। এগুলো মানুষের ত্রুটি, হার্ডওয়্যার/সফ্টওয়্যার ব্যর্থতা বা কর্মীদের দ্বারা ইচ্ছাকৃত প্রতারণামূলক আচরণের কারণে হতে পারে।
পদ্ধতিগত ঝুঁকি: আপনি যে শিল্পে কাজ করেন সেখানে অংশগ্রহণকারীদের ব্যর্থতার কারণে সম্ভাব্য ক্ষতি, যা সেই সেক্টরের সকল ব্যবসাকে প্রভাবিত করে। 2008 সালে যেমনটি হয়েছিল, লেম্যান ব্রাদার্সের পতন বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থায় একটি ধারাবাহিক প্রভাব ফেলেছিল।
যেমনটি দেখতে পাচ্ছেন যে, ঝুঁকি শনাক্তকরণ আপনার পোর্টফোলিওর অ্যাসেট দিয়ে শুরু হয়, তবে এটি কার্যকর হওয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় কারণকেই বিবেচনায় নেওয়া উচিত। পরবর্তীতে, আপনি এই ঝুঁকিগুলো মূল্যায়ন করবেন। কত ঘন ঘন আপনি এগুলোর সম্মুখীন হতে পারে? এগুলো কতটা গুরুতর?
ঝুঁকিগুলো পরিমাপ করে এবং আপনার পোর্টফোলিওতে তাদের সম্ভাব্য প্রভাব খুঁজে বের করে, আপনি সেগুলোকে র্যাঙ্ক করতে পারেন এবং উপযুক্ত কৌশল ও প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, পদ্ধতিগত ঝুঁকি বিভিন্ন বিনিয়োগে বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে প্রশমিত করা যেতে পারে এবং স্টপ-লস ব্যবহার করে মার্কেটের ঝুঁকি হ্রাস করা যেতে পারে।
আর্থিক ঝুঁকির ব্যাখ্যা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বোঝার শিক্ষানবিস গাইড দেখতে ভুলবেন না।
ডে ট্রেডিং কী?
ডে ট্রেডিং হল এমন একটি কৌশল যাতে একই দিনে পজিশনে প্রবেশ এবং প্রস্থান করা হয়। শব্দটি লিগ্যাসি মার্কেট থেকে এসেছে, যে বিষয়টিকে নির্দেষ করছে তা হল এগুলো শুধুমাত্র দিনেরবেলা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা থাকে। এই সময়কালের বাইরে, ডে ট্রেডাররা তাদের কোনো পজিশন সাধারণত খোলা রাখে না।
আপনি সম্ভবত জানেন যে ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে, খোলা বা বন্ধের কোনো বিষয় নেই। আপনি বছরের প্রতিটি দিন চব্বিশ ঘন্টাই ট্রেড করতে পারেন। কিন্তু তবুও, ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রেক্ষাপটে ডে ট্রেডিং একটি ট্রেডিং স্টাইলকে নির্দেশ করে যেখানে ট্রেডার 24 ঘন্টার মধ্যেই পজিশনে প্রবেশ করে এবং প্রস্থান করে।
ডে ট্রেডিংয়ে, কোন অ্যাসেট ট্রেড করতে হবে তা নির্ধারণ করতে আপনি প্রায়শই প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের উপর নির্ভর করবেন। যেহেতু এত অল্প সময়ের মধ্যে মুনাফা খুবই নগন্য হতে পারে, তাই আপনি আপনার সর্বোচ্চ করার জন্য বিস্তৃত পরিসরের অ্যাসেট জুড়ে ট্রেড করা বেছে নিতে পারেন। এর বাইরে, কেউ কেউ বছরের পর বছ